গাজায় গণহত্যার সমার্থনকারী হিসেবেও তাকে অভিহিত করা হচ্ছে
শান্তিতে নোবেল বিজয়ী মাচাদোকে নিয়ে সমালোচনার ঝড়
শান্তিতে নোবেল বিজয়ী মাচাদোকে নিয়ে সমালোচনার ঝড়। তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করছেন সমালোচকরা। তারা এটাও বলার চেষ্টা করছেন নোবেলের জন্য মাচাদোর নির্বাচন যথার্থ নয়।
শুধু সেখানেই থেমে নেই সব। সমালোচকরা এখন মাচাদোর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পোস্টগুলো শেয়ার করছেন, যেখানে তিনি ইসরায়েল ও বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর লিকুদ পার্টির প্রতি সমর্থন জানিয়েছিলেন। তাদের অভিযোগ, গাজায় গণহত্যা চালানো ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন দিয়েছেন তিনি।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আকস্মিক আক্রমণের পর মাচাদো ইসরায়েলের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছিলেন। তবে কখনোই প্রকাশ্যে ফিলিস্তিনিদের হত্যার পক্ষে অবস্থান নেননি তিনি।
তবে তার দীর্ঘদিনের পোস্টগুলোতে এটা পরিষ্কার যে, তিনি নেতানিয়াহুর ঘনিষ্ঠ সমর্থক ছিলেন। সমালোচকরা এমন এক পোস্টের বরাত দিয়ে বলেছেন, যেখানে তিনি লিখেছিলেন, ‘‘ভেনেজুয়েলার সংগ্রামই ইসরায়েলের সংগ্রাম।’‘এর দুই বছর পর তিনি ইসরায়েলকে ‘‘স্বাধীনতার প্রকৃত মিত্র’’ বলে অভিহিত করেন। এমনকি তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ক্ষমতায় এলে ভেনেজুয়েলার দূতাবাস তেল আবিব থেকে জেরুজালেমে স্থানান্তর করবেন।
নরওয়ের সংসদ সদস্য বিয়র্নার মক্সনেস বলেছেন, মাচাদো ২০২০ সালে ইসরায়েলের লিকুদ পার্টির সঙ্গে একটি সহযোগিতা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন। তিনি বলেন, লিকুদ পার্টি গাজায় গণহত্যার জন্য দায়ী। তাই এই পুরস্কার নোবেলের মূল উদ্দেশ্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মুসলিম অধিকার সংগঠন কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনস (সিএআইআর) এই সিদ্ধান্তকে ‘‘অবিবেচনাপ্রসূত ও অগ্রহণযোগ্য’’ বলে সমালোচনা করেছে। অনলাইনে দেওয়া এক বিবৃতিতে সংগঠনটি বলেছে, এই সিদ্ধান্ত নোবেল কমিটির সুনাম ক্ষুণ্ন করেছে এবং তাদের পুনর্বিবেচনা করা উচিত।
বিবৃতিতে বলা হয়, নোবেল শান্তি পুরস্কার কমিটির উচিত এমন কাউকে সম্মান জানানো, যিনি নৈতিকভাবে দৃঢ় থেকেছেন এবং সবার জন্য ন্যায়ের পক্ষে লড়েছেন; যেমন সেই শিক্ষার্থী, সাংবাদিক, কর্মী কিংবা চিকিৎসক, যারা নিজেদের জীবন ও পেশার ঝুঁকি নিয়ে আমাদের সময়ের সবচেয়ে ভয়াবহ অপরাধ ‘‘গাজায় গণহত্যার’’ বিরোধিতা করেছেন।
নিজ দেশে বিদেশি হস্তক্ষেপের আহ্বান
মাচাদো ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে বিদেশি হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছিলেন। নোবেল জয়ের পর তার অতীত এই পদক্ষেপ নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে।
২০১৮ সালে ইসরায়েল ও আর্জেন্টিনার নেতাদের উদ্দেশে লেখা এক চিঠিতে নিজ দেশের ‘‘শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের’’ জন্য সহায়তা চান তিনি।
চিঠিটি অনলাইনে প্রকাশ করে মাচাদো লিখেছিলেন, ‘‘আজ আমি আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট মৌরিসিও মাক্রি এবং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে চিঠি পাঠাচ্ছি, যাতে তারা নিজেদের প্রভাব ও শক্তি ব্যবহার করে ভেনেজুয়েলার মাদক ও সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জড়িত অপরাধী শাসনব্যবস্থাকে গুঁড়িয়ে দিতে সহায়তা করেন।’ সূত্র : এনডিটিবি
কমেন্ট বক্স